রাছুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: “সমস্ত সৃষ্টিজগত আল্লাহর পরিবার। আল্লাহ পাকের নিকট সর্বোত্তম ঐ ব্যক্তি যে সৃষ্টিজীবের সাথে ভাল ব্যবহার করে।” (বায়হাকী) “বিধবা এবং গরীবের খোঁজ-খবর যে নেয় সে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদকারীদের মত, ঐ তাহাজ্জুদগুজারের মত যে তাহাজ্জুদ পড়তে পড়তে কান্ত হয় না এবং ঐ রোজাদারের মত যে সর্বদা রোজা রাখে”। (বুখারী-মুসলিম) ‘অবশ্যই একজন মুসলমানের সাদকা তার হায়াত বৃদ্ধি করে, অপমৃত্যু থেকে বাঁচায়, তার থেকে অহংকার ও অহমিকা মহান আল্লাহ দূর করে দেন।’ (মুজামুল কাবীর, হাদীস-১৩৫০৮)
Thursday, February 20, 2014
Wednesday, February 12, 2014
Saturday, February 1, 2014
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে স্বেচ্ছাশ্রম
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে স্বেচ্ছাশ্রম
এক হাতে কালো রঙের কৌটা, অন্য হাতে রঙের ব্রাশ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বেশ
কয়েকজন তরুণ-তরুণী। তাঁদের সঙ্গে আছেন ট্রাফিক পুলিশের কয়েকজন সদস্য। তাঁরা
সবাই বিভিন্ন ধরনের মোটর যানবাহন থামিয়ে হেডলাইটের ওপরের অংশ কালো করে
দিচ্ছেন।
এমনি করে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর সদর
উপজেলার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রায় এক হাজার যানবাহনের হেডলাইট কালো রং
করা হয়। এতে গাজীপুর ট্রাফিক পুলিশ ও ‘স্যালুট টু পুলিশ’ সংগঠনের ২০ জন
সদস্য কাজ করেন।
গাজীপুর ট্রাফিক পুলিশ জানায়, গাজীপুরের ওপর দিয়ে গেছে
ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। দুটি মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার
হাজার যানবাহন চলাচল করে। প্রায় প্রতিদিনই মহাসড়ক দুটিতে ছোট-বড় দুর্ঘটনা
ঘটছে। এর মধ্যে রাতে যেসব দুর্ঘটনা ঘটে, তার বেশির ভাগই হচ্ছে বিপরীত দিক
থেকে আসা যানবাহনের হেডলাইটের আলোর কারণে। কেননা গাড়ির হেডলাইনের ওপরের
এক-তৃতীয়াংশ কালো রং করার নিয়ম থাকলেও বেশির ভাগ গাড়ির মালিক ও চালক তা
মানেন না।
গাজীপুর ব্যস্ত নগর হলেও এখানে ট্রাফিক পুলিশের মাত্র ৩০
সদস্য কাজ করেন। সম্প্রতি এখানে সহকারী পুলিশ সুপারের (এএসপি) পদ যুক্ত করা
হয়েছে। ওই পদে যোগ দিয়েছেন এএসপি সাখাওয়াত হোসেন। তিনি সড়কে চলাচলরত
যানবাহনের হেডলাইট কালো রং করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু তাঁর একার পক্ষে কাজটি
করা সম্ভব নয় দেখে তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্যালুট টু পুলিশ’-এর সদস্যদের
সহযোগিতা নেন। ওই সংগঠনের এক বছর পূর্তি ছিল গতকাল।
ট্রাফিক পুলিশ ও
স্যালুট টু পুলিশের ১০ জন করে ২০ জন সদস্য গতকাল সকালে চান্দনা চৌরাস্তা
এলাকায় রং ও ব্রাশ নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। বিকেল পর্যন্ত তাঁরা এক হাজার
যানবাহনের হেডলাইটে কালো রং করেন।
এএসপি সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে
জানান, প্রথম ধাপে গাজীপুর সদর উপজেলার চান্দনা চৌরাস্তা মোড় এলাকায়
ঢাকা-টাঙ্গাইল, গাজীপুর-ঢাকা ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন
ধরনের যানবাহনের হেডলাইটে কালো রং দেওয়ার প্রকল্প শুরু করা হয়েছে।
স্যালুট
টু পুলিশের সভাপতি জিনাত জোয়ার্দার বলেন, গত বছরের ৪ মার্চ তাঁদের সংগঠনের
আত্মপ্রকাশ ঘটে। শুরু থেকে তাঁরা পুলিশের দুর্নাম ও খারাপ কাজ পরিহার করে
জনগণের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জোগাতে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, পুলিশের দুর্নাম থাকলেও দেশের অস্থিতিশীল অবস্থায় তারাই জানবাজি
রেখে কাজ করছে।
Source: http://www.prothom-alo.com
Friday, January 31, 2014
স্বামী স্ত্রীর অধিকার
স্বামী স্ত্রীর অধিকার
-নাহিদা আইয়ুব
(অত্র ব্লগারের মন্তব্য: স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের প্রতি অধিকার আদায় নিঃসন্দেহে উত্তম সৃষ্টির সেবা)
নারী আছে বলেই পৃথিবী এত সুন্দর। সুন্দর পৃথিবীর আলো বাতাস। নারী ছাড়া পৃথিবী অস্থির ও অশান্তিময়। বাবা আদম (আ.) কে আল্লাহ্ তা’আলা যখন সৃষ্টি করেন, তখন তিনি শুরুতেই অনুভব করেন এক মহা শূন্যতা, অস্থিরতা ও স্থবিরতা। আল্লাহ্ জানেন, মা হাওয়া-ই আদমের প্রাণসঞ্জীবনী। তাই যুগল বানিয়ে দিলেন তাঁকে। মা হাওয়ার মধুর মিলনে তিনি ফিরে পেলেন নব প্রেরণা। তাই কবি বলেন, পৃথিবীতে যত সুন্দর আছে তা কেবল নারীর কল্যাণেই। আর পুরুষ একা কোনদিন কোন রণে সফল হয়নি।
নজরুলের কণ্ঠে-
কোন কালে একা জয়ী হয়নি গো পুরুষের তরবারী,
শক্তি দিয়েছে, প্রেরণা দিয়েছে, বিজয়ী লক্ষ্মী নারী।
বাহ! নারী সম্পর্কে কি চমৎকার উক্তি। তাই সুখে-দুঃখে নারী হচ্ছে পুরুষের চির সঙ্গীনী, তাকেও মূল্যায়ন করতে হবে আপন হিসেবে। তবেই তো সংসার সুখি হবে।
স্ত্রীর সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে- স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জনে আপ্রাণ চেষ্টা করা ও তার মনোরঞ্জনে নিজেকে সঁপে দেয়া। স্বামী যদি স্ত্রীর কোন কাজে রত অবস্থায়ও আহবান করে, তাহলে সেটা রেখেই তার ডাকে সাড়া দেয়া স্ত্রীর কর্তব্য। এমনকি উনুনে হাড়ি চড়ানো থাকলেও। স্ত্রীর আরো কিছু কর্তব্য হচ্ছে, সব সময় স্বামীর সামনে লজ্জাবনত হয়ে থাকা, স্বামীর নির্দেশ পালন করা, স্বামীর কথা গভীর মনযোগ দিয়ে শ্রবণ করা ও তার বাড়িতে আগমনের সময় দরজায় দাঁড়িয়ে সাদর সম্ভাষণ জানানো। রাত্রে শোয়ার সময় নিজেকে তার কাছে একান্তভাবে সঁপে দেয়া, তাঁর ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিদের প্রতি বিশেষভাবে নজরদারী করা। নিজের সতীত্ব হিফাজতে সজাগ থাকা, তার আত্মীয়-স্বজনদের কদর করা ও তার সামনে সব সময় সেজেগুজে, সুগন্ধি মেখে তাঁকে ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দেয়া ইত্যাদি। স্বামীর উচিত স্ত্রীর মন যোগানোর, ভালোবাসায় স্ত্রীকে বরণ করা। নিজেকে স্ত্রীর জন্য নিবেদিত করা।
স্বামীর আনুগত্যঃ নারীকুলকে আল্লাহ্ রাববুল আলামীন স্বামীর অনুগত ও কৃতজ্ঞ থাকার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ্র নবী (সা.) বলেন- ‘একজন স্ত্রীর জন্য তার স্বামীই হচ্ছে জান্নাত বা জাহান্নাম।’ অর্থাৎ স্বামীর আনুগত্যের মাধ্যমে স্ত্রী জান্নাতের অধিকারী হবে আর তার অবাধ্যতায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। নবীজি (সা.) আরো বলেন- ‘কোনো স্ত্রী যদি তার স্বামীকে সন্তুষ্ট রেখে ইন্তিকাল করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ পুরুষদের তুলনায় নারীদের জান্নাতে প্রবেশ সহজতর। কারণ, নবী করীম (সা.) বলেন- ‘কোনো মহিলা যদি পাঁচ ওয়াক্ত নামায যথাসময় আদায় করে, রমযানের রোযা রাখে ও স্বামীর অনুগত হয়, তাহলে সে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছে করবে, প্রবেশ করতে পারবে।’
জান্নাতী ও জাহান্নামী রমণীর চারটি পরিচয়ঃ
নবীজি (সা.) বলেন- চার শ্রেণীর রমণী জান্নাতী ও চার শ্রেণীর রমণী জাহান্নামী হবে।
জান্নাতী রমণীর চারটি পরিচয়ঃ
১। আল্লাহ্ ও স্বামীর অনুগত রমণী।
২। অল্পে তুষ্ট ও অধিক সন্তানের জননী।
৩। সতী-সাধ্বী লজ্জাবতী নারী, যে স্বামীর অনুপস্থিতিতে তার হক্বের কোন খিয়ানত করে না।
৪। স্বামীর বিয়োগে সন্তানদের ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য করে (সন্তানদের বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া অবধি) অন্য কোনো স্বামী গ্রহণ করে না; বরং ধৈর্য ধারণ করতে থাকে।
জাহান্নামী রমণীর চারটি বৈশিষ্ট্যঃ
১। স্বামীর অবাধ্য স্ত্রী, যে স্বামীকে সব সময় কটু কথা বলে তার মনে আঘাত দেয় এবং তার অনুপস্থিতিতে নিজের সতীত্বকে বিসর্জন দেয়।
২। স্বামীর কাছে এমন জিনিসের বায়না করে যা স্বামীর সাধ্যের বাইরে। এভাবে তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ বানিয়ে ফেলে।
৩। বে-পর্দা মহিলা, যে নিজের দেহ সৌষ্ঠব প্রদর্শন করে পর পুরুষকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করে।
৪। আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্য রমণী, যে শুধু পানাহার আর ঘুম ছাড়া অন্য কোন কাজ করতে নারাজ।
আম্মাজান হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেছেন- মি’রাজের রজনীতে আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়, আর আমি সেখানে অধিকাংশ নারীকেই দেখতে পাই। কারণ, নারীরা কেবল তাদের সৌন্দর্য পর পুরুষকে দেখানোকে পছন্দ করে এবং বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে পুরুষকে আহবান করে।
এজন্য নবী করীম (সা.) বলেন- ‘নারীরা হচ্ছে গুপ্তধন স্বরূপ। সে যখন গৃহের বাইরে বের হয়, শয়তান তখন তাকে উঁকি দিয়ে দেখতে থাকে।’
পর্দা নারী-পুরুষ উভয় কে করতে হবেঃ একবার হযরত আয়েশা ও হযরত হাফসা (রা.) নবী করীম (সা.)-এর সাথে বসেছিলেন। এমন সময় অন্ধ সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম (রা.) সেখানে উপস্থিত হলেন। নবী করীম (সা.) তাদের বলেন- ‘তোমরা গৃহে চলে যাও। তারা দু’জনে বললেন- তিনি তো দৃষ্টিহীন- অন্ধ, আমাদেরকে দেখছেন না। রাসূল (সা.) বললেন- ‘তোমরা দু’জনই কি দৃষ্টিহীন- অন্ধ? তোমরা কি তাকে দেখছ না?
এতে প্রতীয়মান হয় যে, নারী ও পুরুষ উভয়কেই একে অপরের দিকে তাকাতে নিষেধ করা হয়েছে।
নারী স্বাধীনতাঃ নারী স্বাধীনতা, নারীর অধিকার ও নারী উন্নয়নের আজ যতই রসালো স্লোগান দেয়া হোক না কেন, এভাবে কোনদিন নারীর অধিকার সংরক্ষিত হতে পারে না। কারণ, বস্ত্তবাদী কোন মতবাদ নারীকে সঠিক মর্যাদা দিতে পারেনি। আজকের তথাকথিত পাশ্চাত্য সভ্যতাই তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। কিন্তু এরপরও আমাদের দেশের কিছু নারীবাদী সংগঠন রাজপথে অধিকার আদায়ের স্লোগান তুলছে। তাদের প্রতি আমার প্রশ্ন- ‘ওহে মুসলিম নারী! প্রিয় বোনেরা! আপনারা বুঝেও কেন এমন স্লোগান তুলছেন? আপনারা কি এদেশের পারিবারিক প্রথাকে বিলুপ্ত করাকেই ‘নারীর অধিকার সংরক্ষণ’ ভাবছেন? পাশ্চাত্য দেশগুলোর একটু খবর নিয়ে দেখুন। আপনার স্বামীর শয্যাসঙ্গিনী আপনি ছাড়া আরো কেউ হোক তা কি কামনা করেন? আপনি কি চান- আপনার, কন্যা বা বোনের স্বামী একাধিক হোক? তাহলে আপনি কোন স্বাধীনতার কথা বলছেন?
আপনি যে ইউরোপ আমেরিকাকে মডেল হিসেবে ভাবছেন, সে সমাজের সংস্কৃতি তো এটাই। সেখানে সন্তানের বাপের কোন পরিচয় থাকে না? স্ত্রীদের নির্দিষ্ট কোন স্বামী নেই। একটু কষ্ট করে গিয়ে সেদেশের আবহাওয়াটা গায়ে লাগিয়ে আসুন। দেখে আসুন দাম্পত্য জীবনে তাদের কত সুখ……….! (?)
আল্লাহ্ রাববুল আলামীন স্ত্রীকে যেমন স্বামীর আনুগত্য ও তার মনোরঞ্জন রক্ষা করতে বলেছেন, তেমনি পুরুষকেও স্ত্রীর হক্ব তথা তার সাথে কোমল ও সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। একটি সুখি সংসার গড়তে হলে অবশ্যই স্ত্রীর হক্ব যথাযথভাবে আদায় করতে হবে। কখনো যদি স্ত্রী কোনো অসদাচরণ বা দুর্ব্যবহার করে, তাহলে তা ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার মাধ্যমে অনুপম ক্ষমা দিয়ে, মনের সকল ব্যথা ভুলে যেতে হবে। স্ত্রীর প্রতি উদার, কোমল ও তার জীবন ধারণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ্ বলেন- ‘তোমরা স্ত্রীদের সাথে সদাচরণ কর।’
হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন- ‘যে আপন পরিবারের কাছে প্রিয় সে-ই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম।’
অন্য বর্ণনায় আছে, ‘যে আপন পরিজনের সাথে বিনম্র আচরণ করে সেই সর্বশ্রেষ্ঠ।’
স্ত্রীর রাগারাগি এবং হযরত ওমর (রা.)-এর ধৈর্য ধারণঃ
হযরত ওমর (রা.) এর খেলাফত কালে একব্যক্তি হযরত ওমর (রা.) এর নিকট স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে এল। তিনি তার গৃহে প্রবেশ করেই শুনতে পেলেন হযরত ওমরের স্ত্রী ওমর (রা.) কে কঠোর ভাষায় তিরস্কার ও নিন্দা করছে। অথচ তিনি-নীরবে তা শুনেই চলছেন, কোন উত্তর দিচ্ছেন না। এ কান্ড দেখে লোকটি চলে যেতে লাগল এবং সে মনে মনে ভাবতে লাগল, এমন প্রতাপশালী খলিফার অবস্থাই যখন এই সেখানে আমি আর কে? কিন্তু ইত্যবসরে হযরত ওমর (রা.) গৃহ থেকে বের হয়ে দেখলেন একজন লোক প্রস্থান করছে। তিনি তাকে বললেন ভাই! যখন তুমি আমার কাছে এসেছ তাহলে, দেখা না করে চলে যাচ্ছ কেন? লোকটি উত্তর দিলো-আমিরুল মুমেনীন! যে কাজের জন্য এসেছিলাম তার সমাধান হয়ে গেছে। ভাবছিলাম আমার স্ত্রীর ব্যাপারে আপনার কাছে নালিশ করব, এখন দেখি আপনি নিজেই আমার অবস্থার শিকার।
তখন হযরত ওমর (রা.) তাকে বললেন- দেখ ভাই তারও আমার কাছে কিছু অধিকার রয়েছে। সেজন্যই এ তিরস্কার নীরবে সহ্য করলাম। তাছাড়া সে আমার রান্না-বান্না, ছেলে-মেয়েদের প্রতিপালন, কাপড় ধৌত ইত্যাদি করে। অথচ এগুলো তার জন্য জরুরি নয়। তাই তার সামান্য একটু কটু কথা মেনে নেই। তুমিও তোমার স্ত্রীর সঙ্গে সুন্দর আচরণ করো। সে রাগারাগি করলে একটু ধৈর্য ধরো।
Tuesday, January 28, 2014
শহরে বিদেশী অতিথি -পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়তে জাপানি স্বেচ্ছাসেবক
শহরে বিদেশী অতিথি -পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়তে জাপানি স্বেচ্ছাসেবক
- মতিন আবদুল্লাহ
শহর হবে পরিছন্ন। ঝকঝকে-তকতকে। মৃদুমন্দ বাতাস বইবে। নাগরিকরা বসবাস করবে আনন্দে। কারও মনে নগর নিয়ে থাকবে না কোনো দুঃখ-কষ্ট। আর রাজধানী শহর। সে তো হবে আরও পরিপাটি। কেননা এই শহরের ওপর নির্ভর করে একটি দেশের মর্যাদা। এমন শহর কার না কামনা। প্রতিটি নগরবাসীই এমনটি কামনা করে।
- মতিন আবদুল্লাহ
শহর হবে পরিছন্ন। ঝকঝকে-তকতকে। মৃদুমন্দ বাতাস বইবে। নাগরিকরা বসবাস করবে আনন্দে। কারও মনে নগর নিয়ে থাকবে না কোনো দুঃখ-কষ্ট। আর রাজধানী শহর। সে তো হবে আরও পরিপাটি। কেননা এই শহরের ওপর নির্ভর করে একটি দেশের মর্যাদা। এমন শহর কার না কামনা। প্রতিটি নগরবাসীই এমনটি কামনা করে।
কিন্তু আমরা যদি আমাদের ঢাকা শহরের দিকে তাকাই তাহলে কি দেখি। ময়লা-আর্বজনায় শ্রীহীন থাকে এ শহর। ময়লাসৃষ্ট রোগ-জীবাণুতে আক্রান্ত হচ্ছে শহরের বাসিন্দারা। জেনে-শুনে আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের শহরটাকে ধ্বংস করছি। ভরাট করেছি প্রাকৃতিক জলাধার পুকুর, ডোবা। খাল-নদী গিলে খাচ্ছে দখলদাররা। পার্ক দখল হয়ে যাচ্ছে। বৃক্ষগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে। ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য এসব করা হচ্ছে।
আমাদের শহরের জন্য আমাদের মায়া না থাকলেও ভিনদেশীদের মায়া-মমতা রয়েছে। অনেক ভিনদেশীর আমাদের এই শহরের জন্য হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়। তারা দুঃখ পায় আমাদের এসব কর্মকাণ্ডে। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশ আমাদের দেশের শহরসহ বিভিন্ন বিভিন্ন উন্নয়নে কর্মকাণ্ডে সাহায্য-সহায়তা করে থাকে।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। ঢাকা শহর পরিছন্নতা কাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে ছুটে এসেছে তিন জাপানি। এদের দুজন তরুণী, একজন তরুণ। প্রতিদিন তারা পরিবেশ উন্নয়নে পরিছন্নতা কার্যক্রমের গুরুত্ব বোঝাতে নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। ছাত্রছাত্রীদের বোঝাচ্ছেন। সাধারণ মানুষকে বোঝাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সহায়তা করছেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ঢাকা সিটি করপোরেশনকে তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরছেন।
এই জাপানি তিনজনই মাস্টার্স পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তিনজনের কেউ এখনো বিয়ে করেননি। তারা হলেন_ মিউ কি অপু। বয়স ২৮ বছর। ২০১১ সালের শুরুতে ঢাকায় এসেছেন। প্রথমে একা একা কাজ শুরু করেছেন। ঢাকা সিটি করপোরেশনের সহায়তায় তারা এ কাজ করছেন। অপুর পরে এসেছেন হিগা সিনো। বয়স ২৮ বছর। একটি জাপানি কোম্পানিতে চাকরি করতেন তিনি। দুই বছরের জন্য ছুটি নিয়ে এসেছেন ঢাকা শহরের পরিছন্নতা কার্যক্রমে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে। লেখাপড়া শেষ করে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে চলে এসেছেন মিচিকো কোগা। বয়স ২৪ বছর। এখন তারা তিনজন একত্রে কাজ করছেন। বর্তমান তাদের কর্ম এলাকা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২, ৩ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে।
জাপানি এই স্বেচ্ছাসেবকদের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ প্রতিদিন। নানা বিষয়ে কথা হয়। মিউ কি অপু বললেন, তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন বিগত ১৮ মাস ধরে। আর চার মাস পর দেশে ফিরে যাবেন। দেশে ফিরে নতুন করে চাকরি খুঁজে যোগদান করবেন। এরপর বিয়ে করবেন। বাংলাদেশ এবং এদেশের মানুষকে তার অনেক ভালো লাগে বলে জানালেন। হিসা সিনো ও মিচিকো কোগাও জাইকার মাধ্যমে এ দেশে এসেছেন। এখানে তাদের তিনজনের সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়। তারা এখন একযোগে কাজ শুরু করেছেন। থাকবেন পুরা দুই বছর। এর মধ্যে একবার নিজ দেশে বেড়াতে যাবেন। জানালেন, তাদের দেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে যায়। বাংলাদেশ তাদের অনেক ভালো লেগেছে। এদেশের জন্য কাজ করতে পেরে তারা আনন্দিত। রাজধানী ঢাকার আয়তন এখন ৩৬০ বর্গ কিলোমিটার। এই নগরীতে বসবাস প্রায় সোয়া দুই কোটি লোকের। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার মেট্রিকটন বর্জ্য তৈরি হয়। আমাদের ব্যবস্থাপনায় প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার মেট্রিকটন বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়। বাকি ময়লা-আর্বজনা যেখানে-সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে। এসব আবর্জনা থেকে নানাবিধ রোগ-জীবাণু ছড়ায়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এখানে ক্যান্সারের জীবাণু খুঁজে পেয়েছেন। বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী দেশ জাপান। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে জাপান। ঢাকা শহরের ময়লা-আর্বজনা অপসারণে দক্ষ ব্যবস্থাপনা গড়তে জাপানি সাহায্য সংস্থা বা জাইকা ২০০০ সাল থেকে ঢাকা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কাজ করছে। তাদের টার্গেট ২০১৫ সালের মধ্যে ঢাকা শহরে দক্ষ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলবেন। এ পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে অনেক প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। অনেক টাকা ব্যয়ে দুটি ল্যান্ডফিল গড়েছেন। দিয়েছেন পরিবেশবান্ধব বর্জ্য পরিবহন গাড়ি। ঢাকা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা মনে করেন জাপানের সহযোগিতায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে ২০১৫ সালের মধ্যে একধাপ এগিয়ে যাবে দক্ষ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়।
Source: http://valokhabor.com
Subscribe to:
Posts (Atom)