Wednesday, October 16, 2013

বাগেরহাটে স্বেচ্ছাশ্রমে ২০টি খালের কচুরিপানা পরিষ্কার

বাগেরহাটে স্বেচ্ছাশ্রমে ২০টি খালের কচুরিপানা পরিষ্কার

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বিভিন্ন খাল, বিল জলাশয়ে দীর্ঘদিনের জমে থাকা কচুরিপানা স্বেচ্ছাশ্রমে পরিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ৭টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত উপজেলার ১০ সহস্রাধিক বিভিন্ন পেশার নারী-পুরুষ পরিষ্কার কাজে অংশ নেন।
জানা গেছে, খোন্তাকাটা ইউনিয়নের চারটি খালের ১২ কিলোমিটার, ধানসাগর ইউনিয়নের তিনটি খালের ছয় কিলোমিটার, সাউথখালী ইউনিয়নের তিনটি খালের চার কিলোমিটার এবং রায়েন্দা ইউনিয়নের ১০টি খালের সাত কিলোমিটার এলাকার কচুরিপানা পরিষ্কার করা হয়। ছাড়া বিল জলাশয়ের কচুরিপানা পরিষ্কার করা হয়েছে।
স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নেয়া উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের জলিল হাওলাদার, শহিদুল ফরাজী, ফাতেমা বেগম এবং মঞ্জু রানী বলেন, বছরের পর বছর ধরে জমে থাকা কচুরিপানার কারণে পানিসংকট, মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। কচুরিপানা জমে থাকার কারণে জমি চাষের সময় খাল থেকে পানি তুলতে অসুবিধা হতো ছাড়া পথে কোনো নৌকাও চলাচল করতে পারত না। এসব সমস্যা দূর হবে আশায় প্রশাসনের আহ্বানে আমরা স্বেচ্ছাশ্রমে কাজে অংশ নিয়েছি।
কদমতলা গ্রামের মনোয়ারা বেগমইদ্রিস তালুকদার, মো. আফজাল হাওলাদার, ইয়াকুব আলী তালুকদার বলেন, খালের কচুরিপানা তুলে ফেলায় এখন কৃষিকাজসহজে পানি পাওয়া যাবে এবং ডিঙ্গি নৌকা চালিয়ে মাঠের জমিতে যাওয়া যাবে। স্বেচ্ছাশ্রমে ধরনের জনহিতকর কাজ করতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত।
খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খান মতিয়ার রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কাজ করা হয়। ধরনের উদ্যোগে এলাকার সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়।
কর্মসূচির সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. বখতিয়ার হোসেন বলেন, সরকারিভাবে কাজ করতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা প্রয়োজন হতো। টাকা ছাড়াই এলাকাবাসীর ইচ্ছায় স্বেচ্ছাশ্রমে তা করা সম্ভব হয়েছে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুন উজ্জামান বলেন, উপজেলার ২০টি খালের ১৯ কিলোমিটার এলাকার কচুরিপানা পরিষ্কার করা হয়। প্রায় ১০ সহস্রাধিক লোক কাজে অংশ নেন। এলাকার খাল-বিল জলাশয়ে অন্তত ২০ বছরের জমে থাকা কচুরিপানা পরিষ্কার করার ফলে এলাকাবাসীর পানির সংকট দূর হবে এবং বন্ধ থাকা অভ্যন্তরীণ নৌপথ চালু হবে। প্রশাসনের আহ্বানে উপজেলার শিক্ষক, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কৃষক, জেলে, গ্রাম পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, ভিজিডি-ভিজিএফ কার্ডধারী সব শ্রেণীর সাধারণ মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে কাজে অংশ নেয়। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন এলাকায় ব্যান্ড বাজিয়ে কাজে অংশ নেয়া মানুষকে উত্সাহ দেয়। খাল-বিল জলাশয় থেকে তোলা কচুরিপানা দিয়ে কম্পোস্ট সার তৈরি করে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করার চিন্তাও প্রশাসনের রয়েছে।


No comments:

Post a Comment