জিডিপিতে স্বেচ্ছাশ্রম সেবার অবদান ১.৭ শতাংশ
স্বেচ্ছাশ্রম সেবার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বাংলাদেশে নেই। তারপরও বছরে
মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ১ দশমিক ৭ ভাগ অবদান রাখছে এই সেবা। টাকায় যার
মূল্য ১১ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা।
সোমবার বিকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে স্বেচ্ছাশ্রম জরিপ বিষয়ক এক কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যার ব্যুরো ও ইউএনডিপির ইউএনভি প্রোগ্রামের যৌথ উদ্যোগে ২০১০ সালের এপ্রিলে এই জরিপ পরিচালনা করে।
কর্মশালায়
প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল
(অব.) একে খন্দকার। তিনি বলেন, ‘স্বেচ্ছাশ্রম সেবার জন্য বাংলাদেশে কোনো
প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নেই। তারপরও বাংলাদেশের সংস্কৃতি এমন যে একে অন্যের
সাহায্যে সবসময় এগিয়ে আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষের
পাশাপাশি সরকারও দারিদ্র দূর করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম
হচ্ছে ন্যাশনাল সার্ভিস প্রোগ্রাম (এনএসপি)।’
ন্যাশানাল সার্ভিস
পলিসি দ্রুত কার্যকর করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ন্যাশনাল এজেন্সি
থাকলে এই ধরনের স্বেচ্ছাশ্রম ও সেবামূলক কার্যক্রম আরও বেশি প্রাতিষ্ঠানিক
রূপ লাভ করতো। এজন্য সরকার দ্রুত ন্যাশানাল সার্ভিস পলিসিকে কার্যকরি করার
উদ্যোগ নিচ্ছে।’
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী
আহাদ আলী সরকার বলেন, ‘যুবকদের কর্মক্ষম করে গড়ে তুলতে যুব ও ক্রীড়া
মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। যেসব স্বেচ্ছাসেবী এই ধরনের কাজে আগ্রহী তাদের
প্রশিক্ষণ দিতে আমরা প্রস্তুত। দ্রুতই প্রশিক্ষণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
জরিপের
ফলাফল বলা হয়, দেশের ১৫ বছরের উর্ধ্বে ৯ কোটি ৪৫ লাখ ১৯ হাজারের মধ্যে
শতকরা ১৭ দশমিক ৫৫ জন অর্থাৎ ১ কোটি ৬৫ লাক্ষ ৮৬ হাজার এই ধরনের
স্বেচ্ছাশ্রমে যুক্ত। এদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে থাকে
১৬ লাখ ৯ হাজার জন, অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে সেবা দিয়ে থাকে ১ কোটি ৪৭ লাক্ষ ২৯
হাজার জন আর উভয়ভাবে সেবা দেয় ২ লাখ ৪৯ হাজার জন।
এই ধরনের কাজে ৪৫
থেকে ৬০ বছর বয়সী লোকদের বেশি যুক্ত হতে দেখা যায়, যার পরিমাণ শতকরা ৩১
দশমিক ৩৬ ভাগ। এরপর ৩৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী লোক যার পরিমাণ শতকরা ২১ দশমিক ৫২
ভাগ।
সবচেয়ে বেশি স্বেচ্ছাশ্রম দেওয়া হয় ধর্মীয় কাজে, যার পরিমাণ
শতকরা ২৮ দশমিক ৬০ ভাগ। এছাড়া সামাজিক কার্যক্রমে (কমিউনিটি সার্ভিস) ২৪
দশমিক ৫৪ ভাগ, স্বাস্থ্যসেবায় সহায়তা ২১ দশমিক ৬০ ভাগ, শিক্ষা কার্যক্রমে
সহায়তা ১৫ দশমিক ৭১ ভাগ, ব্যক্তিগত ও সামাজিক খাতে সহায়তা ১১ দশমিক শূন্য ৪
ভাগ ও অন্যান্য খাতে স্বেচ্ছাশ্রম সহায়তা ১৬ দশমিক ৫১ ভাগ।
স্বেচ্ছাশ্রম
কাজে সবচেয়ে বেশি যুক্ত ঢাকা বিভাগের অধিবাসীরা (৩৫ শতাংশ) ও সবচেয়ে কম
সিলেট বিভাগের অধিবাসীরা (৫ শতাংশ)। এছাড়া চট্টগ্রামে ২১ শতাংশ, রাজশাহীতে
১৬ শতাংশ, খুলনায় ১৪ শতাংশ ও বরিশালে ৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান
ব্যুরোর সচিব রীতি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া
মন্ত্রণালয় সচিব মাহবুব আহমেদ, ইউএন রেসিডেন্ট কোঅর্ডিনেটর নীল ওয়াকার,
ইউএনভির সাউথ এশিয়া ডেভিলপমেন্ট ডিভিশনের সিনিয়র পোর্টফোলিও ইব্রাহিম
হুসাইন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শাজাহান মোল্লা
প্রমুখ।
১৮ জুলাই ২০১১
Source: http://ebanglanews24.com
No comments:
Post a Comment